এক টন পণ্যকে ২২ টন দেখিয়ে রফতানি প্রণোদনা নেয়ার চেষ্টা!

 কাস্টমস নথি অনুযায়ী চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে মুড়ি, বিস্কুট, মসলাসহ ১ লাখ ৩ হাজার ডলারের ২২ টন পণ্য মালয়েশিয়ায় রফতানি করার কথা। যদিও মাত্র এক টন রফতানি করেই নগদ সহায়তা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা চালিয়েছে বাংলা ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান। চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্মকর্তাদের তৎপরতায় জালিয়াতিটি উদঘাটিত হয়েছে। কনটেইনারে পরীক্ষা করে চালানটিতে ৫ হাজার ডলার মূল্যের এক টন পণ্য পাওয়া গেছে।


রফতানিকারক হিসেবে নিবন্ধিত বাংলা ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের ঠিকানা ঢাকার মতিঝিলের ২৮/১/সি টয়েনবি সার্কুলার রোড ও নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁর ছোট কৃষ্ণদি। আমদানিকারকের পক্ষে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট হিসেবে কাজ করেছে ৮১৭/১ গোসাইলডাঙ্গার জাফর ম্যানশনের ঠিকানার আর ইসলাম এজেন্সি। সিঅ্যান্ডএফ প্রতিনিধি চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজে গত ২১ ডিসেম্বর বিল অব এক্সপোর্ট (নম্বর-সি-১৭৭৬৮৮৮) এবং ১৮ ডিসেম্বর (সি-১৭৬১৯৭৭) দাখিল করেছে।


চট্টগ্রাম কাস্টমসের তথ্যমতে, বাংলাদেশ থেকে কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে সরকার রফতানি মূল্যের ২০ শতাংশ নগদ প্রণোদনা দেয়। মূলত এ নগদ সুবিধাটি নিশ্চিত করতে চেষ্টা চালিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এর আগেও একই প্রতিষ্ঠান ৪৮টি চালানে ২৩ কোটি ৮১ লাখ টাকা মূল্যের পণ্য দেশ থেকে রফতানি হয়েছে। ফলে এ ৪৮টি চালানও এখন নিরীক্ষার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।



চট্টগ্রাম কাস্টমসের সহকারী কমিশনার রেজাউল করিম এ প্রসঙ্গে বলেন,
২২ টন পণ্য রফতানির ঘোষণা দিয়ে মাত্র এক টন পণ্য রফতানির পদক্ষেপটি আটকে দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। এছাড়া এর আগে যেসব চালান বিদেশে রফতানি হয়েছে, সেসবও এখন খতিয়ে দেখা হবে। এ ঘটনায় কাস্টমস আইন অনুযায়ী মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং কাস্টম হাউজের অ্যান্টি মানি লন্ডারিং ইউনিট এটি অনুসন্ধান করবে।’


কাস্টমস তথ্য অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানটি দুটি কনটেইনারে আলাদা চালানে মালয়েশিয়ার একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে এ রফতানির প্রক্রিয়া শুরু করে। এজন্য ঢাকা থেকে কাভার্ড ভ্যানে করে প্রথমে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় বেসরকারি ইস্টার্ন লজিস্টিকস লিমিটেড নামের কনটেইনার ডিপোতে চালান দুটি আনা হয়। এরপর সেখানে দুই কনটেইনারে চালান দুটি বোঝাই করা হয়। সেখানে দায়িত্বরত কাস্টমস কর্মকর্তারা সবকিছু ঠিক আছে বলে প্রত্যয়ন করেন। আবার ওজনও ঠিক আছে বলে ডিপো কর্তৃপক্ষ প্রত্যয়ন করে। তবে চট্টগ্রাম বন্দরে নেয়ার আগেই চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার ফখরুল আলম চালানটির বিষয়ে জালিয়াতির গোপন সংবাদ পান। পরে তারই নির্দেশে চট্টগ্রাম কাস্টমসের অডিট, রিসার্চ ও ইনভেস্টিগেশন দল কনটেইনার দুটি খুলে এ জালিয়াতি উদঘাটন করে।