ছোট শিশু আশামনি (৪) দুই দিন থেকে অনাহারে। খেতে চাইতেই মারধর শুরু করেন বাবা-মা। সারা শরীরের আঘাতের চিহ্ন নিয়ে গুরুতর আহত আশামনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে।নির্দয়ভাবে শিশুটিকে মারধরের কারণে গ্রামবাসী পাষণ্ড বাবা আশরাফুল ইসলামকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে। সোমবার বিকালে উপজেলার ধরনীবাড়ি ইউনিয়নের মাদারটারী গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
জানা গেছে, উপজেলার ধরনীবাড়ি ইউনিয়নের মাদারটারী গ্রামের আবুল কাশেমের পুত্র আশরাফুল আলম ও তার স্ত্রী ফাতেমা বেগমের কন্যাসন্তান আশামনিকে কারণে অকারণে প্রতিনিয়ত নির্যাতন করে আসছিল। এরই একপর্যায়ে ঠুনকো ঘটনাকে কেন্দ্র করে মারধর করে গত দুই দিন ধরে অনাহারে রাখে শিশুটিকে।
সোমবার সকাল থেকে ক্ষুধার্ত শিশু আশামনি খেতে চাইলে আবারও তার ওপর পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়। পরে বিকালে খাবারের জন্য ছটফট শুরু করলে বাবা আশরাফুল আলম ও মা ফাতেমা বেগম শিশুটির মুখ বেঁধে বেধড়ক মারপিট শুরু করে।
এ ঘটনা আশপাশে বাড়ির লোকজন এসে তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করলেও শিশুটিকে নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা করতে পারেনি। পরে শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়লে এলাকাবাসী শিশুটি উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে এবং পাষণ্ড বাবা-মাকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ শিশুটির বাবাকে আটক করে থানা নিয়ে আসে।
শিশুটির বাবার বড় ভাই (জ্যাঠা) জহুরুল ইসলাম বলেন, প্রতিনিয়ত তার ছোট ভাই আশরাফুল শিশুটিকে মারপিট করে। বহুবার আমি তাকে অনুরোধ করার পরও ক্ষান্ত হয়নি।
তিনি আরও জানান, জন্মের পর তাকে তার ফুফুর কাছে রেখে ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকরি করত আশামনির বাবা-মা। বাড়ি ফিরে এসে আশামনিকে তাদের কাছে ফিরে নিলেও সে তার ফুফুকেই মা বলে ডাকে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বাবা-মা মিলে শিশু আশামনিকে প্রায়শই কারণে-অকারণে নির্যাতন করত।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত চিকিৎসক উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ডা. জসিম উদ্দিন সরকার বলেন, বাবা-মা নিজের সন্তানকে এভাবে নির্যাতন করতে পারে তা কোনো দিন দেখিনি। শিশুটির চিকিৎসা চলছে।
উলিপুর থানার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, শিশুটির বাবা আশরাফুল আলমকে আটক করা হয়েছে